জাতীয়

পুলিশের বাধায় রাস্তায় বসেই প্রতিবাদ কর্মসূচি

পুলিশের বাধার মুখে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে রাস্তায় বসেই ‘প্রতিবাদী গানের মিছিল’ কর্মসূচি পালন করেছেন প্রতিবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে শুরু করে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সসয় তাদের স্লোগান দিয়ে, গান গেয়ে ও কবিতা আবৃত্তি করে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়।

দীর্ঘ ২ ঘণ্টা ধরে তাদের সড়কে অবস্থানের কারণে বন্ধ ছিল জিরো পয়েন্ট থেকে বাবুবাজার অভিমুখের সড়কের যানচলাচল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সংগঠনটির এই কর্মসূচি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহাদুরশাহ পার্কে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জিরো পয়েন্টের একটু সামনের খদ্দর বাজার শপিং কমপ্লেক্সের কাছে পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয়। পরে কয়েক দফা পুলিশ এবং সংগঠনটির সদস্যরা ধ্বস্তাধস্তি এবং বাগবিতণ্ডায় জড়ান।

একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা রাস্তাতেই বসে পড়েন। এ সময় তাদের সরকারবিরোধী এবং কোটা আন্দোলনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। তাদের ‘এই সময় দ্রোহের,’ ‘কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর শোক’, ‘রক্তাক্ত জুলাই’, ‘একটা ছেলেকে হত্যা করতে কয়টা গুলি লাগে পুলিশ’, ‘দালাল হাসপাতাল, ‘আমার ভাই চিকিৎসা পেল না কেন’ ইত্যাদি বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

প্রতিবাদকারীরা বলেন, সম্প্রতি সরকার অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সারা দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তারা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন করেছে। এখন গণগ্রেপ্তার এবং হামলা-মামলা করে সারা দেশে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, সারা দেশে ছাত্রদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। শুধু আমরা নই আজ সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। সরকার নানাভাবে তাদের দমনের চেষ্টা করছে। নানা চক্রান্তের মাধ্যমে সাধারণ প্রতিবাদী মানুষজনকে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, জোর করে ডিবি কার্যালয়ে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের কাছ থেকে আন্দোলন বন্ধের ঘোষণা আদায় করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

তিনি বলেন, সরকারকে বলতে চাই, আপনারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করুন। না হলে জনগণ টেনেহিঁচড়ে আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামাবে।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন উদীচীর সহসভাপতি জামশেদ আহমেদ তপন। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্কের দিকে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বাধার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমরা সড়কেই অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা থেমে থাকব না। আগামী শুক্রবার বিকেল ৩টায় প্রেস ক্লাব থেকে শহীদ মিনার অভিমুখে শোক মিছিল করা হবে। যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না।

প্রতিবাদ সমাবেশে কণ্ঠশিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, কবি, লেখক ও গবেষক হাসান ফখরি, সাংস্কৃতিক কর্মী কাকলি পারভীনসহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading