ক্যাম্পাস

ছাত্রলীগকে ঠেকাতে জাবিতে লাঠি হাতে শিক্ষার্থীদের মহড়া

বহিরাগতদের সহযোগিতায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক হামলার শঙ্কায় লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফটকে মহড়া দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। জাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ২টা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৩টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই আহত কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘জাবি তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ‘আমি কেন রাজাকার? জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতারা বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আজ তারা বিভিন্ন গেটে অবস্থান নিয়েছে বহিরাগতদের নিয়ে। তাদের যোগ্য জবাব দিতে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছি।

সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কাল রাতে জানতে পেরেছি বহিরাগত নিয়ে এসে আমাদের জাবি ক্যাম্পাসের ভাইদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আজও তারা হামলার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফটকে অবস্থান নেন। তাদের হামলা প্রতিহত করতে আমরা এখানে এসেছি।

জাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার মডেল কলেজ, সাভার সরকারি কলেজ, বেপজা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পারমাণবিক শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজ, সাভার যুব উন্নয়ন, ধামরাই সরকারি কলেজের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে বহিরাগতসহ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকটি লেগুনা ও মোটরসাইকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এই খবরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে বের হয়ে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই বহিরাগতসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লেগুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ মাইল ফটক ত্যাগ করে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, আমাদের নিরাপত্তা শাখা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

এর আগে সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে উপাচার্যের বাস ভবনের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। পুলিশের উপস্থিতিতে সেখানে ঢুকে তাদের মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিভিন্ন হল থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর চড়াও হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও ছররা গুলি নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে দায়িত্ব পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনসহ ওই হলের ছাত্রলীগ নেতাদের কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর চালান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading