আসামে বন্যা : মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছাল ৮৫ জনে
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে বন্যার গত প্রায় দেড় মাসে নিহতের মোট সংখ্যা ৮৫ জনে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে সোমবার মারা গেছেন ৬ জন।
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার ধুবরি জেলায় ২ জন, গোয়ালপাড়া জেলায় ১ জন, গোলাঘাটে ২ এবং শিবাসগড়ে ১ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের জেরে রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র, সুবানসিড়ি, দিখৌ, দিসাং, বুড়িদিহিং, কোপিলি, বরাক এবং সাঙ্কোশ— এই ৮টি নদ-নদী বিপজ্জনকমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় গত মে মাসের শেষ দিক থেকে বন্যা শুরু হয় আসামের বিভিন্ন জেলায়। রাজ্যের ৩৫টি জেলার ২৭টিতেই ঢুকেছে বন্যার পানি। এসব জেলার বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকায় পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন প্রায় অন্তত ২২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধুবরি জেলা। এই জেলার উপদ্রুত এলাকাগুলোতে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন অন্তত ৪ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ। এ তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাছাড় ও বেরপাতা জেলা। এ দু’টি জেলায় বন্যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সংখ্যা যথাক্রমে ২ লাখ এবং এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার।
গত প্রায় দেড় মাসের বন্যায় আসামের ৩ হাজার ১৫৪টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। মারা গেছে হাজার হাজার গবাদি পশু ও হাঁসমুরগি। এছাড়ার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সেতু, রাস্তাঘাট প্রভৃতি অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বন্যার কারণে।
মঙ্গলবারের বিবৃতিতে এএসডিএমএ জানিয়েছে, বন্যার্তদের জন্য সরকারি উদ্যোগে রাজ্যের ২৫ জেলায় মোট ৫৪৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এসব শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যার কারণে বাড়ি-ঘড় ছেড়ে আসতে বাধ্য হওয়া ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ জন মানুষ। এছাড়া আটকে পড়া পানিবন্দিদের উদ্ধারে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কাজ করছে দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদল। ভারতের আধাসামরিক বাহিনী এসডিআরএফ এবং এনডিআরএফ এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করছে।