বন বিভাগে জমা রাখা রাসেলস ভাইপারের জন্য পুরস্কার দিল আ.লীগ
জীবিত রাসেলস ভাইপার ধরার বিপরীতে ৫০ হাজার করে টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় তা প্রত্যাহার করে নেয় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। তবে এর আগেই পুরস্কারের আশায় জীবিত তিনটি রাসেলস ভাইপার নিয়ে যান তিনজন। সে সময় বনবিভাগ থেকে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র না থাকায় তাদেরকে পুরস্কারের টাকা দেওয়া হয়নি।
এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক জানান, পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করার আগে যারা জীবিত সাপ জমা দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তিন ব্যক্তির হাতে পুরস্কারের ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর সদরের রেজাউল করিম, আজাদ শেখ ও শাহজাহান খান
আজাদ শেখ বলেন, আমি জেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত পুরস্কারের ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। কথা রাখার জন্য জেলা আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ।
রেজাউল করিম বলেন, পুরস্কারের এই ৫০ হাজার টাকা আমার পরিবারে খুব কাজে লাগবে। পাশাপাশি সাপুড়ে না হয়েও সাপ ধরে যে টাকা পেলাম এটা একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ বলেন, আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী ওই তিন ব্যক্তিকে পুরস্কারের ৫০ হাজার করে মোট দেড় লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ তাদের কথা রেখেছে। পাশাপাশি সাপ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে সাপ তিনটি পৌঁছে দেন ফরিদপুর বন বিভাগের প্রহরী মো. জাহিদুল ইসলাম। সাপগুলো বুঝে নেন কার্যালয়ের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য।
তিনি বলেন, যে তিনটি রাসেল ভাইপার ফরিদপুর বন বিভাগ থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে একটি সাপ মারা গেছে। আরেকটি মৃতপ্রায়। শুধু একটি সাপ সুস্থভাবে বেঁচে আছে। জীবিত সাপটির ব্যাপারে বন বিভাগ খুলনা ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে গত ২০ জুন রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) মারতে পারলে তার বিপরীতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছিল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক। এ নিয়ে সমালোচনা হওয়ার একদিন পরে ২১ জুন জেলা আওয়ামী লীগ সেই ঘোষণা থেকে কিছুটা সরে এসে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, নিজে সুরক্ষিত থেকে জীবিত রাসেলস ভাইপার ধরে বন বিভাগে জমা দিলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। গতকাল সেই ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেয় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ।