ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন আজ
চলতি মাসের শুরুতেই ভারতে ঘোষণা করা হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ফল। এরপর গঠিত হয়েছে নতুন সরকার। এবার নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার পালা।
আর এ লক্ষ্যেই নিট-নেট পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ভারতে শুরু হচ্ছে পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন। সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সোমবার থেকে দেশটিতে শুরু হচ্ছে নতুন সংসদের অধিবেশন। মূলত এটি সংসদের বিশেষ অধিবেশন হতে চলেছে যেখানে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী সদস্যরা সংসদ সদস্য হিসাবে সংসদে শপথ নেবেন। এই অধিবেশনেই সংসদের দুই কক্ষের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু।
লোকসভা নির্বাচনের পর ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে নতুন সরকার। এবার সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার পালা। সোমবার অধিবেশনের শুরুর আগেই রাষ্ট্রপতি ভবনে বিজেপি সংসদ সদস্য ভর্তৃহারি মহতাবকে লোকসভার প্রো-টেম স্পিকার হিসাবে শপথ পাঠ করাবেন প্রেসিডেন্ট মুর্মু।
এরপরে বিজেপি সংসদ সদস্যরা সকাল ১১টায় সংসদে পৌঁছাবেন এবং অধিবেশন শুরুর আহ্বান জানাবেন।
প্রথমদিনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা নীরবতা পালনের পর লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেল উৎপল কুমার সিং সকল নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের তালিকা পেশ করবেন। এরপর প্রোটেম স্পিকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লোকসভার দলনেতা হিসাবে শপথ পাঠের আহ্বান জানাবেন।
এরপর প্রোটেম স্পিকারকে সাহায্য করার জন্য প্রেসিডেন্টের সুপারিশে সদস্যদের শপথ পাঠ করানো হবে।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট প্রোটেম স্পিকারের সহকারী হিসাবে কংগ্রেসের সুরেশ, ডিএমকে-র টিআর বালু, বিজেপির রাধামোহন সিং, ফাগন সিং কুলাস্তে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সুপারিশ করেছেন।
চেয়ারপারসনদের শপথের পর প্রোটেম স্পিকার মন্ত্রীদের শপথ পাঠ করাবেন। আগামী দুইদিন ধরে সংসদে কেবল প্রতিটি রাজ্য থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করানো হবে।
এরপর আগামী ২৬ জুন লোকসভায় অনুষ্ঠিত হবে স্পিকার নির্বাচন। এরপর প্রেসিডেন্ট আগামী ২৭ জুন সংসদের দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। প্রেসিডেন্টের সেই বক্তব্যের ধন্যবাদ জ্ঞাপন নিয়ে ২৮ জুন থেকে আলোচনা শুরু হবে।
আগামী ২ বা ৩ জুলাই পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এরপরে অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাবে। আগামী ২২ জুলাই থেকে বাজেট পেশের জন্য ফের অধিবেশন শুরু হতে পারে।
এদিকে নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ ও অধিবেশন শুরুর মাঝে রেল দুর্ঘটনা, একাধিক সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সামনে আসায় বিরোধী শিবির বেশ উজ্জীবিত। প্রথম দিন থেকেই কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এসপি বা ডিএমকের মতো দল একজোটে ময়দানে নামতে প্রস্তুত।
সংসদের শুরুর দিনে বিরোধীরা কোনও বৈঠক না করলেও, ঠিক হয়েছে সোমবার সকালেই বিরোধী ইনডিয়া জোটের সংসদ সদস্যরা হাতে সংবিধান নিয়ে একসঙ্গে সংসদের দুই নম্বর দরজা দিয়ে প্রবেশ করবেন। মূলত অধিবেশন শুরুর দিন থেকেই জোটের বার্তা দেওয়াই এর লক্ষ্য।
ফলে তৃতীয়বার জিতে এসেও অধিবেশন শুরুর আগে রীতিমতো ব্যাকফুটে রয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
মূলত গত দু’টি লোকসভা নির্বাচনে একক ভাবে ম্যাজিক সংখ্যা ছুঁতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি ভিন্ন। বিজেপি সরকার এবার শরিক নির্ভর। ফলে প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় গোড়া থেকেই পাল্টা-আক্রমণের পথে এগোনোর কৌশল নিয়েছে বিরোধী দলগুলো।