সারাদেশ

‘ভাই দাম কত’

‘দাম বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। হাটে গরু কেনা থেকে শুরু হয়েছে দাম জিজ্ঞাসা। যাই দেখছে, তাই জিজ্ঞাসা করছে- এ ভাই দাম কত বা কত হলো। মানুষ দাম জিজ্ঞাসা করায় মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগছে, আবার আনন্দও লাগছে। আসলে এমন দাম জিজ্ঞাসা শুধুমাত্র কোরবানির পশু কেনার ক্ষেত্রেই হয়।’

বুধবার (১২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী সিটি হাটের অদূরে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গরুর ক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন। সাত ভাগে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় গরু কিনেছেন তারা। সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে গরুর দড়ি ধরে আছেন সবুজ ইসলামসহ আরও কয়েকজন। তাদের বাড়ি নগরীর সাতবাড়িয়া এলাকায়।

সাজ্জাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বছরে একটা দিনই তো কোরবানি হয়। কোরবানির গরু কিনতে আসা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আলাদা একটা ভালোলাগা কাজ করে সবার মধ্যে। গরু কেনা, তারপর দড়ি ধরে সেই গরু হেঁটে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া। এই ব্যপারটাই অন্য রকম। আসলে উৎসব এমনই হওয়া উচিত।

সবুজ ইসলাম বলেন, তার কাছে গরুর হাটের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি দর কষাকষি। হাটে অনেক গরু দেখে একটা গরু কেনা হয়। সেই গরু কেনার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ভালো লাগে। গরু কেনার আগে পরে হাটে গরুর কালাভুনা (গোস্ত) দিয়ে ভাত খাওয়া। হাটে ঢোকার আগে গামছা কিনে গলায় ঝুলানো এক অন্য রকম মজা।

তাদের সঙ্গে থাকা আব্দুর রাহিম বলেন, বয়স তো আর কম হলো না। একটা সময় গেছে ১০ হাজার টাকায় বড় গরু পাওয়া যেত। ভাগিরা মিলে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা করে তুলে গরু কিনেছি। আর এখন এটা এক কেজি মাংসের দাম। এই কথা বললে নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করবে না। তবে এমন দিন গেছে। লাখ টাকার গরু কিনে নিয়ে গেলে আশপাশের মানুষ দেখতে এসেছে। আর এখন ৫ লাখ টাকা দামের গরু কিনলে মানুষ কিছুই মনে করে না।

তিনি আরও বলেন, কোরবানির ঈদে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষের পোশাকের অতটা চাহিদা থাকে না। সবার টার্গেট থাকে গরু, মহিষ বা ছাগল কোরবানি দেওয়ার। সেই জায়গা থেকে এই ঈদে বাড়তি একটা অনন্দ যোগ হয় কোরবানির পশু। কোরবানির হাটে গিয়ে পশু কেনা। সেটাকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসা। পরিবারের সবাই ভিড় করে সেই গরু দেখা ছাড়াও অল্প কয়েকদিনের জন্য সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে কোরবানির গরুর যত্ন নেওয়ার বিষয়গুলো অনেক মজার।

সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। দূর-দূরান্ত অনেক ক্রেতা-বিক্রেতারা এসেছেন। তারা গরু কেনাবেচা করছেন। কেনাবেচা ভালোই চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading