অপারেশন ক্লিন-আপ : দল থেকে বাদ পড়ছেন পাকিস্তানের ৬ ক্রিকেটার!
পাকিস্তানের ক্রিকেটে অস্থিরতা
- ম্যানেজার ওয়াহাব রিয়াজের প্রশ্রয়ে দলের তিনজন খেলোয়াড়ের একটি গ্রুপ পিসিবি কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ
- সম্ভাব্য বাদ পড়াদের তালিকায় আমির ও ইমাদ ওয়াসিম এবং ইফতেখার, আজম খান ও উসমান খান।
- দুর্বল নেতৃত্ব ও সতীর্থদের মধ্যে তাকে ঘিরে অসন্তোষের কারণে অধিনায়কত্ব হারাতে পারেন বাবর
নতুন কোচিং স্টাফ, পুরনো নেতায় আস্থা এবং অবসর ভেঙে দলে ফেরানো হয় দুই তারকা ক্রিকেটার। বেশ আটঘাঁট বেধেই শিরোপা পুনরুদ্ধারের আশায় মার্কিন মুল্লুকে পা রেখেছিল সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। আইসিসির সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে লো স্কোরিং ম্যাচে অবিশ্বাস্য হারের পর এখন বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় বাবর আজম বাহিনী।
নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে জয়ে যদিও কাগজে-কলমে আশা এখনো টিকে আছে। তবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সুপার এইটের ভাগ্য নির্ভর করছে অনেক যদি-কিন্তুর ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আপসেটের পর হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে ভারতকে মাত্র ১১৯ রানে আটকে দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু এই ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ব্যর্থ হয়েছেন দলের ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত ৬ রানের ব্যবধানে হেরে গেছে পাকিস্তান। ভারতের বিপক্ষে হতাশার হারের পরই দলে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসীন নাকভি।
গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাকভি বলছিলেন, ‘মনে হয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য মাইনর সার্জারিই (ছোটখাটো অস্ত্রোপচার) যথেষ্ট। কিন্তু এ ধরনের বাজে পারফরম্যান্সের পর এটা পরিষ্কার যে, দলে মেজর সার্জারি দরকার।’ আগামী বছর পাকিস্তানের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা রয়েছে। চলতি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আসন্ন টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত হতে দলের বাইরে থাকা প্রতিভাবানদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন পিসিবি প্রধান।
এবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে দাবি, বিশ্বকাপের পর দলের ৬ খেলোয়াড় বাদ পড়ছেন। বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যাক্তি এবং সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে মহসিন নাকভি এ বিষয়ে আলোচনা করছেন বলেও খবর। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানা গেছে। স্বজনপ্রীতির কারণে এসব খেলোয়াড়কে দলে নেওয়া হয়েছে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর তিন ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাবর আজম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আগে তাকে পুনরায় নেতৃত্বে ফেরানো হয়। তবে চলমান আসরে তারকা এই ব্যাটারের নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে অনেক। দেশটির গণমাধ্যমে দাবি, মাঠে তার দুর্বল নেতৃত্ব ও সতীর্থদের মধ্যে তাকে ঘিরে অসন্তোষের কারণে অধিনায়কত্ব থেকে বাদ পড়তে পারেন তিনি। উল্লেখ্য, তারকা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও বাবর আজমের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টিও মাঝেমধ্যে খবরের শিরোনাম হয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দেশটির কিংবদন্তি শহীদ আফ্রিদিও।
বিশ্বকাপের আগে শাহিন আফ্রিদিকে সরিয়ে বাবরকে আবার সাদা বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। জামাইকে অধিনায়ক হিসেবে একটা সিরিজ দেখেই বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ছিলেন শহিদ আফ্রিদি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পরপর দু’টি ম্যাচে হারের পর হতাশ আফ্রিদি দায়ী করেছেন বাবরকেই। সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘একজন অধিনায়ক দলের সবাইকে এক সূত্রে বাঁধতে পারে। আবার সে দলের পরিবেশ নষ্টও করে দিতে পারে। শ্বকাপ শেষ হোক। আমি খোলাখুলি সব বলব।’
বিশ্বকাপ ব্যর্থতা নিয়ে কঠোর অবস্থানে যেতে চাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বিশ্বকাপে দলের সিনিয়র ম্যানেজার এবং নির্বাচক প্যানেলের সদস্য ওয়াহাব রিয়াজসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের ওপর কোপটা পড়তে যাচ্ছে বলে খবর। সম্ভাব্য বাদ পড়াদের তালিকায় রয়েছেন অবসর ভেঙে দলে ফেরা মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম এবং ইফতেখার আহমেদ, আজম খান ও উসমান খান।
জিও নিউজের খবরে একটি গুরুতর বিষয়ও উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, ম্যানেজার ওয়াহাব রিয়াজের প্রশ্রয়ে দলের তিনজন খেলোয়াড়ের একটি গ্রুপ পিসিবি কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেইল করছে। এই খেলোয়াড়রা চাপ দিচ্ছেন তাদের সম্মানি বাড়ানোর জন্য। আর তাতে ইন্ধন রয়েছে ওয়াহাবের। বিশ্বকাপ শেষে অধিনায়ক বাবর আজম, প্রধান কোচ গ্যারি কারস্টেন, সিনিয়র ম্যানেজার ওয়াহাব রিয়াজ এবং সহকারী কোচ আজহার মেহমুদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পাকিস্তান দলে পরিবর্তন আনবে বোর্ড।