খেলাধুলা

নতুন দিনের আশায় ভোরে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ

আটলান্টিক পাড়ে চলছে ক্রিকেট উৎসব। এরই মধ্যে মাঠে গড়িয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১১টি ম্যাচ। জমা পড়ছে কতশত গল্প। ক্রিকেট বিশ্ব যেমন রূপকথার সাক্ষী হচ্ছে, তেমনি আছে আপসেট কিংবা হাহাকারের গল্পও। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামা উগান্ডা নিজেদের প্রথম জয়টা তুলে নিয়েছে এরই মধ্যে। ফেবারিট পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকে বার্তা দিয়ে রেখেছে আইসিসির সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রও। ওদিকে, বিশ্বকাপের পিচ নিয়েও বিস্তর কথা হচ্ছে। তবে এতকিছুর মধ্যেও যেন এতদিন ছিল না একটা নাম। বাংলাদেশ। 

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব খবর পেতে ক্লিক করুন 

 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে টপ অর্ডাররা ভালো করেনি বা করছে না। কিন্তু কালকের দিনটা পুরোপুরি নতুন দিন এবং অনুশীলনে যার যে জায়গায় সমস্যা আছে সবাই শতভাগ দিচ্ছে। উন্নতির জায়গা যদি বলেন অবশ্যই আগের জায়গা থেকে সবাই ভালো অবস্থায় আছে।’

সবাই নিজেদের জায়গা থেকে উন্নতির চেষ্ট করছে। অনুশীলনেও যথেষ্ট সময় দিচ্ছে বলে মনে করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘অনুশীলন দেখে বা নেটে ব্যাটিং করেছি সবাই তাতে মনে হয়েছে আগের থেকে ভালো অবস্থায় আছে। আগে কী হয়েছে এটা চিন্তা না করে কালকে একটা নতুন দিন। কালকে আমরা কেউই জানি না কে ভালো খেলবে, কে খারাপ খেলবে। নতুন দিনটায় আমার মনে হয় যে থিতু হবে, ভালো শুরু করবে তার খুব বড় দায়িত্ব খেলাটা কীভাবে শেষ করছে। আশা করছি যেভাবে আমাদের ব্যাটাররা প্রস্তুতি নিয়েছে ওইটা যদি বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে ভালো ম্যাচ হবে।’

খুব একটা স্বস্তিতে নেই শ্রীলঙ্কাও। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের বাজে পারফরম্যান্স টাইগারদের কিছুটা হলেও আশাবাদী করতে পারে। ওই ম্যাচে মন্থর উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের দলে মূল সমস্যা ব্যাটিং। আশানুরূপ বোলিং পারফরম্যান্সে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন দলের বোলাররা। এ কারণেই মন্থর উইকেট বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করছে।

ডালাস এবং নিউইয়র্কের সাথে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটের মিল আছে। শ্রীলঙ্কাকে ধরাশায়ী করতে উইকেটের ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশ। যদিও রেকর্ডটা পাশে পাচ্ছে না শান্তরা। ২০০৭ সালের প্রথম আসর দিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়টিই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত বড় কোনো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়। অস্ট্রেলিয়ায় সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি জয় পেয়েছিল টাইগাররা। সেটিই এক আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড। কিন্তু তিনটি জয়ই তুলনামূলক ছোট দলের বিপক্ষে পেয়েছিল টাইগাররা। লঙ্কানদের বিপক্ষে এ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ভার্সনে ১৬ ম্যাচ মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে পাঁচটিতে জয় ও ১১টিতে হেরেছে তারা। বড় দলগুলোর মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই সবচেয়ে বেশি জয় আছে টাইগারদের। এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।

গ্রুপ ‘ডি’-তে শ্রীলঙ্কা ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। পরের রাউন্ডে যেতে চাইলে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে যে কোনো একটি বড় দলকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে। অপরদিকে চাপে থাকবে লঙ্কানরাও। বাংলাদেশকে যদি হারাতে না পারে তাহলে পরের রাউন্ডের পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে লঙ্কানদের। সেক্ষেত্রে অনেক যদির ওপর নির্ভর করতে হবে তাদের।

নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারানোর চাপ দল কাটিয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন লঙ্কান অধিনায়ক হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। সাইড স্ট্রেন ইনজুরির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজে এবং অনুশীলন ম্যাচে খেলতে না পারা পেসার তাসকিন আহমেদের প্রত্যাবর্তনে আত্মবিশ্বাসী থাকবে বাংলাদেশ। কিন্তু দলের আরেক সেরা পেসার শরিফুল ইসলামকে পাবে না টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বোলিং হাতে ইনজুরিতে পড়েন শরিফুল।

বাংলাদেশ স্কোয়াড : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি অনিক, তানভির ইসলাম, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব।

রিজার্ভ : আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ

শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড : হাসারাঙ্গা ডি সিলভা (অধিনায়ক), চারিথ আসালাঙ্কা (সহ-অধিনায়ক), কুসাল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কা, কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, দাসুন শানাকা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, মহেশ থিকশানা, দুনিথ ওয়েলালাগে, দুশমন্থ চামিরা, মাথিশা পাথিরানা, নুয়ান থুশারা, দিলশান মাদুশঙ্কা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading