২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে সবার স্বার্থ রক্ষার বাজেট বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রস্তাবিত এ বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এ বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়, পরে ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেট শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হুইপ স্বপন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শীর্ষক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথযাত্রার দিকনির্দেশনার সন্নিবেশন। বর্তমান অস্থির বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার ধাক্কা মোকাবিলা আমাদের মতো মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে মাত্রাতিরিক্ত জনগণ অধ্যুষিত ছোট্ট দেশের খাদ্য, পুষ্টি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই বাস্তবতার আলোকে গরিব জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়নের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে সুনিপুণভাবে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। সর্বশ্রেণির নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেট সবিশেষ ভূমিকা পালন করবে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানাই।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
দেশের ১৮তম অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবারই প্রথম বাজেট পেশ করেছেন। এটি দেশের ৫৩তম বাজেট।