খেলাপি ঋণ এক লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে

ব্যাংক খাতের প্রধান ক্ষত খেলাপি ঋণ। নানা পদক্ষেপ নিয়েও এ ক্ষত নিরাময় করতে পারছে না নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উল্টো দিন দিন বাড়ছে। সবশেষ ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ১০৫ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এটি বাড়িয়ে এক ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ঠিক করা হয়েছে।
নানা সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে। এজন্য এবারের অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য ধরা হচ্ছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’।
আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের এ আকার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে সরকারের ঋণস্থিতি ঋণাত্মক ছিল। তবে ঋণ বাড়তে থাকে। গত ১২ মে পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৭০ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগে নেওয়া ১৯ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। ফলে আলোচিত সময় সরকার নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। সম্প্রতি সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়লেও গত জানুয়ারি পর্যন্ত এ খাতে সরকারের ঋণস্থিতি ছিল ঋণাত্মক ১২০ কোটি টাকা।