ফেসবুকে প্রেম, প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে এসে ধর্ষণের শিকার তরুণী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে প্রেমিক পলাশ দাশের সঙ্গে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ঘুরতে যান ওই তরুণী। পরে ওই তরুণীকে মেঘনা নদীর পাশে একটি জঙ্গলের ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করেন প্রেমিক পলাশ দাস। এ সময় বিষয়টি দেখে ফেলেন কয়েকজন ছিনতাইকারী। এরপর ছিনতাইকারীদের একজন ওই তরুণীকে আবারও ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় প্রেমিকসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভৈরব মেঘনা নদীর পাড়ের রেলওয়ে জোড়া সেতু সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন প্রেমিক নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি গ্রামের মনিন্দ্র দাসের ছেলে পলাশ দাস (১৮), একই এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে রাব্বি (১৯), ভৈরব শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার সুমন মিয়ার ছেলে নির্জন ওরফে আরিয়ান (১৭), শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে সান (১৭), একই এলাকার আংগুর মিয়ার ছেলে আবদুল্লাহ (১৮), শহরের কমলপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে পাপন (১৮), শহরের চন্ডিবের এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে হাসান (১৭) ও একই এলাকার আনাস মিয়ার ছেলে ফুয়াদ (১৯)।
এদের মধ্যে নির্জন ও প্রেমিক পলাশ দাস তরুণীকে ধর্ষণ করেন। বাকি ছয়জন তাদের সহযোগিতা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বাদী হয়ে ভৈরব থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায়। শুক্রবার (২৪ মে) আসামিদের কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেওয়া হয়। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তরুণীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রেমিক পলাশের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। বৃহস্পতিবার তারা প্রথমে ভৈরবের মানিকদি এলাকার একটি সেতু সংলগ্ন রেস্টুরেন্টে আড্ডা দেন। পরে বিকেলের দিকে তারা দুজন মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে যান। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে নদীর পাড়ের একটি জঙ্গলের ঝোপে নিয়ে পলাশ দাস ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ঘটনাটি দেখে ফেলেন ওই এলাকায় অবস্থানরত কয়েকজন ছিনতাইকারী। পরে তারা দুজনকে আটক করে দুটি মোবাইলসহ টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেন। পরে নির্জন নামে এক ছিনতাইকারী আবারও ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই তরুণীসহ ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী তরুণীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে শুরুতে তিনি নির্জনের নাম বললেও প্রেমিক পলাশ দাসের কথা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে আসামিদের সাক্ষ্যপ্রমাণে তিনি পলাশ দাসের কথা স্বীকার করেন।
ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তরুণীর মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।