টেকনাফে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, মূল অভিযুক্তসহ ৬ আসামি গ্রেপ্তার
সম্প্রতি টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে ব্যবসায়ী সাবেরকে (৩৭) নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি মো. ইয়াছিনসহ (৩৫) ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে রাজধানীর পল্টন এলাকায় র্যাব-৩ এবং র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন গ্রেপ্তারদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তাররা হলেন, মূল অভিযুক্ত মো. ইয়াছিন (৩৫), মো. সালমান (২৭), আব্দুল্লাহ (৪৩), সোহাগ (৩২), বাবলু (২৮), আব্দুল জব্বার (৩১)।
এএসপি শামীম জানান, ভুক্তভোগী সাবের টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটে জুতার ব্যবসা করতেন। তার দোকানের সামনে গ্রেপ্তার প্রধান আসামি ইয়াছিনের একটি বন্ধ দোকান রয়েছে। গ্রেপ্তার ইয়াছিন পূর্বশত্রুতার জেরে সাবেরের ব্যবসা শুরুর পর হতেই তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে অহেতুক হয়রানি করে বেচা-বিক্রিতে ক্ষতিসাধন করতো। এবিষয়ে ভুক্তভোগী সাবের মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জানালে গ্রেপ্তার ইয়াছিন ও অন্যান্য আসামিরা সাবেরকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
গত ২ এপ্রিল বিকেল ৫টায় সাবের নিজ দোকানের জায়গা সংকটের কারণে গ্রেপ্তার ইয়াছিনের বন্ধ থাকা দোকানটির সামনে একটি জুতার বস্তাসহ কয়েক জোড়া জুতা ঝুলিয়ে রাখে। এ নিয়ে ইয়াছিন অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইয়াছিন, সালমান, আব্দুল্লাহ, সোহাগ, বাবলু, জব্বার এবং পলাতক আসামি নুর হোছেন, এমরান ও কেফায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন মিলে ধারালো টিপ ছুরি, রামদা, হাতুড়ি ও লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগী সাবেরকে দোকান থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নৃশংস হামলা চালায়। গ্রেপ্তার ইয়াছিন তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে সাবেরের মাথায় আঘাত করলে সাবের মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপরও আসামিরা লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে উপর্যুপরি আঘাত করে।
পরে মার্কেটের লোকজন এবং ভুক্তভোগীর ভাই ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় সাবেরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৮দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই সাদেক বাদী হয়ে ১৩ এপ্রিল টেকনাফ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই আসামিরা গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়।
সর্বশেষ গতরাতে র্যাব-৩ এবং র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর পল্টন এলাকা হতে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পলাতক অপরদের গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।