লাইফস্টাইল

আরেকজনের সন্তানকে কি শাসন করা যাবে?

শৈশবে খেলার সাথিদের মধ্যে খুনসুটি তো হবেই। একই পরিবারে বেড়ে উঠতে থাকা চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো ও খালাতো ভাইবোনদের বেলাতেও তা–ই। মা-বাবা ছাড়া পরিবারের অন্য সব বড়রা ওদের অভিভাবক। ‘মা-বাবার সন্তান’ এই পরিচয় ছাপিয়ে এখানে বড় হয়ে ওঠে ‘পরিবারের সন্তান’ পরিচয়টাই। এমন পরিবারের আত্মিক বন্ধন হয় দৃঢ়। শিশুদের খুনসুটি বড়সড় সমস্যার দিকে এগোতে থাকলে পরিবারের অভিভাবকদেরই ইতিবাচকভাবে তা সমাধানের জন্য চেষ্টা করতে হবে।

অপরকে সাহায্য করার মনোবৃত্তি নিয়ে বেড়ে ওঠে, নিজের জিনিস সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েই সহনশীলতার শিক্ষা পায় শিশুরা। তবে সব শিশু একেবারে এক ছাঁচে বেড়ে উঠবে, এমনটাও কিন্তু নয়। কেউ একটু শান্ত হবে, কেউ চঞ্চল। শিশুরা একই সঙ্গে খেলাধুলা, পড়ালেখা, খাওয়াদাওয়া করতে গেলে নানা বিষয় নিয়েই খুটখাট লাগতে পারে। এসবকে বড় করে দেখা যাবে না। অভিভাবক হিসেবে প্রয়োজনে সবাইকেই শাসন করতে হবে। এমনটাই বলছিলেন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রশিদুল হক।

শিশুদের খুনসুটি বড়সড় রূপ নিতে থাকলে, কোনো শিশু শারীরিক বা মানসিক আঘাত পেলে অভিভাবক হিসেবে আপনাকে তা মিটমাটের দায়িত্ব নিতে হবে। যার যেটা ভুল, তাকে সেটা ধরিয়ে দিন। কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা মানে যে ছোট হয়ে যাওয়া নয়, সেটিও বুঝিয়ে বলতে হবে। সবাই মিলেই একটা পরিবার। মিলেমিশে থাকার গুরুত্বটা ব্যাখ্যা করুন। অবস্থা বুঝে শাসনও করুন।

আপনার সন্তান ছাড়া অন্য যে শিশু রয়েছে, সে আপনার এই প্রচেষ্টার পরেও অবাধ্য আচরণ করলে আপনি বিষয়টি নিয়ে তার মা-বাবার সঙ্গে আলোচনা করুন। এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বড়দের পারস্পরিক সম্পর্ক। বড়দের মধ্যে সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্য থাকলে আপনি খুব সহজভাবেই এ ধরনের কথা বলতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, আপনার বলার ভঙ্গিতে যাতে কোনো অভিযোগ ফুটে না ওঠে।
পরিবারের সবচেয়ে বড় দিক হলো পারস্পরিক সহযোগিতা। যেকোনো পরিস্থিতিতেই সহমর্মিতার এই মনোভাব যদি বড়দের আচরণে প্রকাশ পায়, শিশুরাও সেটাই শিখবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যেখানে একটি শিশু দেখবে বাবার বিপদে চাচা দৌড়ে আসছেন কিংবা চাচির অসুস্থতায় মা রাত জেগে সেবা করছেন, সেখানে এই বোধ তার ভেতর জন্মে যাবে, পরিবারের সব শিশুই তার ভাইবোনের মতো। সবাই মিলেই এক। রোজকার জীবনের ক্ষুদ্র স্বার্থের ভাবনা না ভেবে ধীরে ধীরে সে সবার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতেই শিখবে। কারও প্রতি রাগ বা অভিমান জন্মালে, তা মিটে যেতেও সময় লাগবে না। মমত্ববোধটাই বড় হয়ে উঠবে শিশুমনে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading