টেক নিউজ

বাসযোগ্য গ্রহের খোঁজে নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার

মহাকাশ বেশ রহস্যপূর্ণ স্থান। আর তাই মহাজাগতিক বিভিন্ন বস্তুর পাশাপাশি গ্রহ বা তারার সন্ধানে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করছেন জ্যোতির্বিদেরা। এবার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করে সৌরজগতের বাইরে থাকা বাসযোগ্য গ্রহ শনাক্তে নতুন ও সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে তারা। এ পদ্ধতির মাধ্যমে মহাজাগতিক বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই–অক্সাইড পরিমাপ করে সহজেই বাসযোগ্য গ্রহ শনাক্ত করা সম্ভব। শুধু তা–ই নয়, গ্রহটিতে পানির উপস্থিতি রয়েছে কি না, তা–ও জানা যায়। নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

গত ৩০ বছরে সৌরজগতের বাইরে থাকা ৫ হাজার ২০০–এর বেশি গ্রহের খোঁজ মিলেছে। বর্তমানে জ্যোতির্বিদেরা এসব গ্রহ শনাক্তের পাশাপাশি শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য গবেষণা করছেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে একেকটি গ্রহের তথ্যাদি জানতে অনেক বছর সময় প্রয়োজন হয়। কারণ, এ প্রক্রিয়ায় প্রথমে একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এরপর সেই তথ্য আশপাশের অন্য কোনো গ্রহের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।
গবেষকদের মতে, কোনো গ্রহের বায়ুমণ্ডলে তার আশপাশে থাকা গ্রহের তুলনায় কার্বন ডাই–অক্সাইডের পরিমাণ কম পাওয়া গেলে সেখানে পানির উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দ্রবীভূত হয়ে কমতে থাকে। ফলে কার্বন ডাই–অক্সাইড ও ওজোন গ্যাস পর্যবেক্ষণ করে বাসযোগ্য গ্রহ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব। এত দিন নির্দিষ্ট গ্রহে পানির উপস্থিতি শনাক্তের কোনো পদ্ধতি জানা না থাকায় বাসযোগ্য গ্রহ শনাক্ত করা বেশ কঠিন কাজ ছিল।

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সোপ্ল্যানেটোলজির অধ্যাপক আমাউরি ট্রাইউড জানিয়েছেন, নতুন এ পদ্ধতিতে সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা পরিমাপ করা মোটামুটি সহজ। কার্বন ডাই–অক্সাইড অবলোহিত রশ্মি বা ইনফ্রারেড বিকিরণের একটি শক্তিশালী শোষক। বিভিন্ন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইডের পরিমাণ তুলনা করে আমরা নতুন বাসযোগ্য গ্রহ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রহবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক জুলিয়েন ডি উইট জানিয়েছেন, শুক্র ও পৃথিবী গ্রহ দেখতে অবিশ্বাস্যভাবে একই রকম। শুক্রের বায়ুমণ্ডলে খুব উচ্চ স্তরের কার্বন রয়েছে। কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা গ্রহগুলোকে আলাদাভাবে বুঝতে সহায়তা করে। পৃথিবীতে প্রাণের জন্য ২০ শতাংশ কার্বন ডাই–অক্সাইড কাজ করছে, বাকি অংশ প্রধানত মহাসাগর দ্বারা শোষিত হয়। অন্য গ্রহে এ মাত্রা অনেক বেশি হতে পারে। একসঙ্গে কার্বন ডাই–অক্সাইড আর ওজোন গ্যাস পর্যবেক্ষণ করে সহজেই গ্রহের বাসযোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading