প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যা করেছে সৌদি প্রবাসী রিপন আলী (২৬) নামের এক যুবক।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিপন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশাদুল হকের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের আর্থিক সংকট ঘোচাতে ৪ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি দেয় রিপন আলী। গতকাল শুক্রবার বাবাকে মোটরসাইকেল কেনার টাকা পাঠানোর কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস শুক্রবার সকালেই তার মৃত্যুর খবর শুনতে হয় পরিবারের সদস্যরা। মোবাইলে কথা বলার সময় প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া ও বাগ্-বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে এই প্রবাসী যুবক।
নিহতের প্রবাসী বন্ধুদের মাধ্যমে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার জিন্নানগর গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলত রিপন আলী। প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ থাকার কারণে কিছুদিন ধরে সে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ শহরের আল কাসিম ব্রদা এলাকায় কৃষি খামারে কাজ করছিল রিপন। একপর্যায় তার শারীরিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে রুমে চলে যায়। আমরা কাজ শেষ করে রুমে এসে রিপনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই। এসময় মরদেহের সামনে থাকা মোবাইল ফোন চেক করে সর্বশেষ প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়েছে বলে জানতে পারি। পরে পরিবারের কাছে আমরা ফোনের মাধ্যমে মৃত্যুর খবর পৌঁছাই।
নিহতের পিতা আসাদুল হক জানান, আমার ছেলে ৪ বছর ধরে সৌদি আরবে আছে। পরিবারের সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। প্রেমঘটিত কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পেয়েছি। মরদেহ আনার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছি। মরদেহ আনতে না পারলে সৌদি আরবে দাফন করা হবে।
ছেলেও কিছুদিন আগে একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরেও বলেন, আমার ছেলে কিছুদিন আগে মোবাইলে একটা মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছিল। আমি তখন তাকে বলেছিলাম, যদি ওই মেয়ে রাজি থাকে, তাহলে আমরা মোবাইলে বিয়ে পড়িয়ে রাখব। বউমাকে আমাদের সঙ্গে বাড়িতে রাখব।
উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, একটা মেয়ের সঙ্গে রিপনের সম্পর্ক ছিল। কোনো কারণে মনোমালিন্য হলে ভিডিও কলে প্রেমিকাকে রেখেই আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। রিপন সৌদি আরবে গেলেও সেখানে কাজের বৈধতা পায়নি। মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রক্রিয়া চলছে।