ঝিনাইদহে বেড়েই চলেছে সাপে কাটা রোগী, নেই অ্যান্টিভেনম!

ঝিনাইদহে বর্ষাকাল এলেই বেড়ে যায় সাপের উপদ্রব। প্রায় প্রতিদিনই সাপে কামড়ানো রোগী আসছে হাসপাতালে। কিন্তু ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম না থাকায় চরম জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে এ জেলার মানুষেরা।
রোগীর স্বজনদের দাবি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিষধর সাপে কেটে বহু মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) একই দিনে জেলার শৈলকুপা উপজেলার দিঘল গ্রামের তাবাচ্ছুম তমা (৬) এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের সিনথিয়া (৫) নামের দুই শিশু সাপে কেটে মারা গেছে। তমাকে নিয়ে তার স্বজনরা সঠিক সময়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছালেও অ্যান্টিভেনম না থাকায় তাকে ফরিদপুর রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালে যাবার সময় রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
সদর হাসপাতালের সামনে ওষুধ বিক্রেতা আল-হেরা ফার্মেসির মালিক এস এম মসলেম উদ্দীন জানান, জেলার কোথাও জীবন রক্ষাকারী এই প্রতিষেধকের সাপ্লাই নেই। সাধারণ মানুষ যে হাসপাতালের বাইরে থেকে এই অয়ান্টিভেনম কিনবে তারও উপায় নেই।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় এ বছর সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৪০ জন। এ বছর বিভিন্ন সময়ে ৪ জন মারা গেলেও অভিযোগ আছে অ্যান্টিভেনম না পাওয়ায় রোগী মারা গেছে ২ জন।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, এই যুগে জীবন রক্ষাকারী এ ওষুধের সংকট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কারো কোনো গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় তবে অবশ্যই ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমরা এর একটা ব্যবস্থা করারা চেষ্টা করব।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গত এক মাস ধরে অ্যান্টিভেনম সাপ্লাই বন্ধ ছিল। গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর তিনটি ডোজ পাওয়া গেছে। বর্তমানে অ্যান্টিভেনম সাপ্লাই খুবই কম।
অ্যান্টিভেনমের জন্য সিভিল সার্জনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে হয়। তারপর তারা প্রস্তাবনা দিলে ঢাকা থেকে এই ওষুধগুলো আসে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া ব্যপার।
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম করণে কোনো রোগী মারা যায়নি। গত বছর একজন মারা গিয়েছিল। তবে বর্তমানে বাইরের বিভিন্ন ফার্মেসিতে ১৫ হাজার টাকায় অ্যান্টিভেনম কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ ঢাকা পোস্টকে জানান, গত ১ মাস সদর হাসপাতাল ও শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে ১৫ ডোজ অ্যান্টিভেনম মজুদ আছে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।